মা দিবস প্যারোডি

মা দিবস প্যারোডি


মা’কে আমরা মা বলি আর তোমরা বল মম,
মায়েরা নয় মমের চেয়ে একটুখানি কম।
মমের হাতে সোনার ঘড়ি গলায় হীরের হার,
মায়ের হাতে কাঁচের চুড়ি শরীর হাড্ডিসার।
মমের ব্যাগে মোবাইল ফোন আর মেকাপ-লিপস্টিক!
পারফিউমের সুগন্ধিতে পূর্ণ চারিদিক।
মায়ের ব্যাগে পান-সুপুরি যত্ন করে রাখা;
কাতান শাড়ির গিটে বাঁধা দু’চার-পাঁচটি টাকা।
শপিংমলে মমরা করেন কত্তো কেনাকাটা,
আমরা দেখি মায়ের কপাল চিরকালই ফাটা।
মায়ের শপিং বাসন-কোসন নূতন হাড়ি-পাতিল,
জোড়াতালির সায়া-ব্লাউজ—কিচ্ছুটি নয় বাতিল।
ভীষণ মায়ার জগৎটি তাঁর ছোট্ট রান্নাঘর,
ঘরের কোণে ছনের ঝাড়ু সঙ্গী জীবনভর।
মমরা যেন প্রজাপতি হেথায়-সেথায় ওড়েন;
কাজের বুয়া গিন্নি হয়ে গ্যাসের চুলায় পোড়েন!

মমকে তোমরা খুঁজে ফেরো ‘নিডো’ ‘লেক্টোজেনে’,
আমরা তুষ্ট মায়ের দুধে, বার্লি ভাতের ফ্যানে।
মমের শ্রান্তি সিরিয়াল আর উষ্ণ চায়ের কাপে;
মায়ের জীবন আঁধারবন্দি দারুণ অভিশাপে।
কাঁচের বাক্সে ডোরিমনরা ঘুমেতে হাই তোলে,
তোমরা দোলো দোলনাতে আর আমরা মায়ের কোলে।
রাজকুমারীর গল্প শুনি আমরা রাজকুমার,
এক পলকে সাত সাগর আর তোরো নদী পার!
মায়ের ছেলে রাজার কুমার রানি নয় সে নিজে,
ছেলের জন্য প্রাসাদ গড়ে, করে কত্তো কী যে!
মমের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার কিংবা রাষ্ট্রপতি,
কর্তব্যের বোঝা কাঁধে দেশ ও দশের প্রতি।

দিনশেষে তোমরা বলো—
‘মমের ছেলে যত্নে মানুষ তুলোর বিছানায়’।

আমরা বলি—
‘মায়ের গায়ের গন্ধ কি আর টাকায় কেনা যায়’?

মমরা বলেন—
‘ছেলেমেয়ের রেজাল্ট খারাপ, হোয়াট অ্যা ব্যাড লাক্’!

মায়েরা বলেন—
‘চিরটাকাল মানিক আমার বুকের মধ্যে থাক্’।