ফানুশেরা

একটা আধমরা জ্যোৎস্না দেখলাম চিৎ হয়ে শুয়ে আছে টেবিলের ওপর। সদ্য নিভে যাওয়া মোমবাতিটির সবটুকু ধোঁয়া মিলিয়ে যাবার আগেই সে আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসলো।

বহু মানুষ আসলে মানুষ চিনতে ভুল করে না, না-চেনার ভাণ করে—বিস্তারিত ভেতরের পাতায়।
অথচ পাতার কোনো ভেতর নেই। সবটাই বাহির। কিছু মানুষ পাতার মতো। পাতা। গাছের না, পত্রিকার। অজস্র মিথ্যেয় ভরা সুন্দর সব শব্দ-বাক্যের ভাগাড়—এ সব ভাবতে ভাবতে জ্যোৎস্নাটি যখন ফানুশ হয়ে আকাশে উড়তে শুরু করলো, আমি আলগোছে চলে এলাম ঘরে। সেই যে কবে একটা পদ্য লিখেছিলাম, মনে পড়লো আবার।

“আমি দূরের মানুষ দূরেই গেলাম,
না-ই বা এলাম কাছে।
যখন আমিই কেবল আমার তখন,
কার কী বলার আছে;
কী-ই বা বলার আছে।”

মানুষ ফানুশের মতো। জ্বলতে জ্বলতে ওড়ে। কিন্তু কিছু সময়ের জন্য। একদিন সত্যি সত্যিই নিভে যায়। আমি হয়তো মানুষ, ফানুশও।