নিভৃতে
ভালো লাগার মানুষ গুলো যখন নানা ব্যস্ততায় খানিক সময়ের জন্যেও সময় দিতে পারেনা তখন খারাপ লাগে ভীষণ। ভালো না লাগার কেউ যখন যেচে এসে কথা বলতে চায় তখনও অতোটা ভালো লাগে না।ভালো লাগে তখন, যখন ভালো লাগা-না লাগা দ্বন্দ্বের মাঝখান থেকে কেউ এসে অনেকটা দূর থেকেই জিজ্ঞেস করে— কেমন আছি; এবং উত্তরের অপেক্ষা না করেই চলে যায়।
অথবা যখন ইট-পাথরের এই ব্যস্ত যান্ত্রিক শহরে অজস্র প্রাণের উৎসব আর ছুটোছুটির মাঝখানে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিস্তব্ধ-নিশ্চল আমিটার সঙ্গে রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপের উপর দাঁড়ানো ঘরে না ফেরা কালো কাকটির চোখাচোখি হয়ে যায়; একবার, দুইবার এবং আরো অনেকবার; সন্ধ্যেবেলা, প্রতিদিন।
কিংবা মধ্য রাত্তিরে যখন অন্ধকার ঘরের এক কোণে বসে শুনতে পাই, পোশা টিকটিকিটা আমার ভাবনার সঙ্গে সায় দিয়ে যাচ্ছে অবিরাম; ভালো লাগে তখনও। জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে চারতলার উপর থেকে তখন দেখি নানা রঙের আলোয় আলোকিত সেই চিরচেনা শহরের এক অন্যরকম ছবি; ভাবি— জীবন কতো রঙিন! পোশা টিকটিকি তখনও সায় দেয়, ঘরের দেয়ালে ঝুলানো সত্তর টাকার ঘড়িটার টিকটিক শব্দের সঙ্গে মধ্য রাতে অন্ধকার ঘরে জানালায় দাঁড়িয়ে থাকা আমি মানুষটার হৃদস্পন্দনের পার্থক্য নেই তেমন।
তখন দুচোখ বন্ধ করে একবুক বাতাস টেনে নিই বুকের ভেতরে; আর বিশাল আকাশের দিকে মুখ করে অসংখ্য তারাদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকি— ভালো আছি। বেশ ভালো আছি।