এই আছি বেশ

এই আছি বেশ


এখানে স্বপ্ন আছে স্বপ্ন দেখার চোখটা যে নেই,
এখানে স্বপ্নেরা তাই অনাদরে ধূলায় লুটোয়।
এখানে স্বপ্ন-দেখা অন্ধ শিশুর মুখটা দেখেই
প্রভুরা স্বপ্নগুলো বন্দি রাখেন হাতের মুঠোয়।
এখানে চোখের জলে সমুদ্র হয় মরুর বুকে,
এখানে নর্দমাতে ভবিষ্যতের ফুল যে ফোটে।
এখানে শ্রান্ত নারীর রক্তশ্রাবের গন্ধ শুঁকে
সুশীলের আধমরা সব চেতনারা গর্জে ওঠে।
এখানে নেতার মুখে ইতিহাসের গল্প শুনে
জনতা বালিশ চেটে মেজবানি খায় ঘুমের ঘোরে।
এখানে প্রেম-প্রীতি আর পরম ভালোবাসার গুণে
সুখেতে বিভোর হ’য়ে ঘর যে বাঁধে পুলিশ-চোরে।
এখানে চিকিৎসা আর ওষুধ-পথ্য জগৎ-সেরা।
তবুও সর্দি হ’লে হাসপাতালে মরে চাষী।

এখানে লোকের মুখে কসাইখ্যাত ডাক্তারেরা
কৃষকের ফসল খেয়ে অকালে হয় স্বর্গবাসী।
এখানে সম্মানিত শিক্ষাগুরু শিক্ষা দিতে
মেয়েদের বদ্ধ ঘরে নিত্য করেন বস্ত্র হরণ।
এখানে ছাত্রেরা সব জগৎখ্যাত রাজনীতিতে,
ছেলেদের চাকরি জোটে চেটেচুটে নেতার চরণ।
এখানে আলসে-ঢেকি কবি-লেখক-সমালোচক
সুখেতে ঘরের কোণায় মস্ত সোনার ডিম পেরে যান,
তাঁহাদের গিন্নি রাঁধেন খাদ্য যতো মুখে-রোচক,
কানেতে বাজে সদা হিন্দি ছবির ইংরেজি গান।
এখানে এমনি ক’রেই কত্তো কী-যে ঘ’টে চলে,
ঘটনার ঘনঘটায় অহর্নিশি জীবনটা শেষ;
তবুও আমজনতা দাঁত খিঁচিয়ে হেসে বলে—
“চেপে যাঃ মূর্খ ব্যাটা হ্যাংলা কবি, এই আছি বেশ”!